গুপ্তধন কথাটা শুনলে ই মনের মধ্যে কেমন যেন একটা রোমাঞ্চ তৈরি হয়। নিজেদের কে কেমন গোয়েন্দা গোয়েন্দা মনে হয়। অধিকাংশ গুপ্তধন ই লুকোনো থাকে কোন রাজ বাড়ির নিচে অথবা কোন মন্দিরে।
আজ আমরা এমন একটি মন্দিরের সম্পর্কে আলোচনা করব যেটি বর্তমানে সবচেয়ে ধনী মন্দির বলে বিবেচিত হয়েছে। পদ্মনাভস্বামী মন্দির। কেরালায় অবস্থিত এই মন্দিরটি তার ধন সম্পদের এর জন্য জগৎবিখ্যাত।
আটশ শতকে কেয়ামত রাজা মন্দিরটি নির্মাণ করেন। তারপর 900 শতকে মাতঙ্গ দাস নামে ভক্ত শ্রী বিষ্ণুর পায় নিজেকে সমর্পণ করে তিনি তার সমস্ত ধনসম্পত্তি মন্দির কে দিয়ে দেন। শোনা যায় এখনো সেগুলি মাটির নিচে লুকানো আছে।
ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন ইংরেজরা এই মন্দিরের উপরিভাগে র সমস্ত সম্পত্তি লুট করে নিয়ে যায় নিজেদের দেশে। কিন্তু তারা ভাবতেও পারেনি মন্দিরের নীচে এত বেশি ধনসম্পত্তি লুকোনো থাকতে পারে। বর্তমানে প্রাপ্ত ধন সম্পত্তি হিসেবে এই মন্দিরের সম্পত্তি র মূল্য প্রায় এক লক্ষ্ 32 হাজার কোটি টাকা। এই মন্দিরটির 6 টি দুয়ার খুলে প্রচুর পরিমাণ সোনার রূপার অলংকার, মুদ্রা, তৈজসপত্রাদি উদ্ধার করা গেছে ।
কিন্তু মন্দিরের সপ্তম দুয়ার কিছুতেই খোলা যাচ্ছে না অথচ এই দুয়ারটি তে কোন তালা দেওয়া ও নেই। দুয়ারটি রক্ষা করছে দুটি নাগরাজ। পুরোহিত দের মতে একমাত্র গড়ূর মন্ত্র উচ্চারণ এর মাধ্যমে এই দুয়ারটি খোলা সম্ভব। কিন্তু শুদ্ধাচারে সে মন্ত্র উচ্চারণ করতে পারে এমন সিদ্ধপুরুষ তো নেই।
আবার এও বলা হয় এই দুয়ারটি যিনি খুলবেন দুয়ার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই তার মৃত্যু ঘটবে। তাই এক গাঢ় রহস্যময়তায় আবৃত হয়ে আছে এই মন্দির । এই মন্দির নিয়ে লোক কথার অন্ত নেই। বর্তমানে মন্দিরটি দেখাশোনা করেন কেয়ামত রাজার ই বংশধরেরা। কিন্তু মন্দিরের সপ্তম দুয়ার খোলার ব্যাপারে তারা কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
মন্দিরটি কিন্তু তার স্থাপত্য শিল্প এবং সূক্ষ্ম কাজের জন্য বিখ্যাত তামিল ও কেরালা রীতির অনবদ্য শিল্পকলা দেখতে পাওয়া যায় মন্দিরের গায়ে। এটি মূলত বিষ্ণুমন্দির। ভগবান বিষ্ণু অনন্ত শয্যায় শায়িত । মন্দিরের গর্ভগৃহে এমন মূর্তি পূজিত হয়।
তবে বিশ্ব ইতিহাসে এই মন্দিরটি কিন্তু তার রহস্যময় তা এবং গুপ্তধন এর জন্যই বেশি প্রসিদ্ধ।
No comments:
Post a comment