যারা আক্ষেপ করেন যে কলকাতা আর তার আশেপাশে পশ্চিম কিংবা দক্ষিণ ভারতের মতো বিভিন্ন বিশাল মাপের আর সুন্দর কারুকার্য দিয়ে মোড়া কোনো মন্দির দেখতে পারেন না, তাদের আমি বলবো একবার ডায়মন্ড হারবার রোডের ওপর জোকা থেকে সামান্য এগিয়ে পৈলানের কাছে ভাসা বলে একটা জায়গায় স্বামীনারায়ণ মন্দির ঘুরে আসতে। বেহালা চৌরাস্তা থেকে আমতলা যাওয়ার পথে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে একদম হাইওয়ের ধারে বাঁদিকে দেখতে পাবেন এই বিশাল মন্দির।
প্রায় ২০০ একর জমির উপর তৈরি এই মন্দিরের অনেকগুলো অংশ আছে। প্রধানত মার্বেল, বেলেপাথর আর লালপাথর ব্যবহার করে এই অসাধারণ স্থাপত্যকীর্তি গড়ে তোলা হয়েছে। কথিত আছে বহু বছর আগে স্বামীনারায়ণ দক্ষিণ ভারত থেকে এই রাস্তা দিয়ে গঙ্গা সাগর গিয়েছিলেন। এই মন্দির তৈরি করতে সময় লেগেছে অনেকটা। শেষে ২০১৪ সালে সর্বসাধারণের জন্যে মন্দির খুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মন্দিরে প্রবেশ করার ফটক খোলা থাকে। মন্দির চত্বরে ঢুকতে কোনো প্রবেশ মূল্য লাগবে না। ডানদিকে অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে গাড়ি পার্ক করার জায়গা। মোটর সাইকেলের জন্যে ২০ টাকা আর গাড়ির জন্যে ৫০ টাকা লাগে। মন্দিরে ঢোকার আগে ডানপাশে রয়েছে একটা বিশাল ক্যান্টিন। সেখানে দক্ষিণ ভারতীয় খাবার থেকে উত্তর ভারতীয় সবরকম খাবার পাবেন। এমনিতে দুপুরের মিল পাবেন দুরকম। একটা শুধু পাঁচমিশালি তরকারি দিয়ে খিচুড়ি ভোগ, সাথে একটু আচার, দাম ৫০ টাকা থালি। এছাড়া পঞ্চব্যঞ্জন দিয়ে সাজানো পোলাওয়ের থালিও আছে , দাম পড়বে ১৩০ টাকা। তবে যাই খান না কেন সবটাই নিরামিষ। ভীষণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খাওয়ার জায়গাটা। একসাথে প্রায় পাঁচশো লোক বসে খেতে পারে এখানে।
পথনির্দেশ:- যদি মেট্রোতে আসেন তবে নেমে পড়ুন উত্তমকুমার স্টেশনে। উল্টো দিকে খানিকটা এগিয়ে বেহালা চৌরাস্তা কিংবা ঠাকুরপুকুর যাওয়ার অটো ধরে পৌঁছান ডায়মন্ড হারবার রোডে, সেখান থেকে বাসে মাত্র ৯ কিমির পথ। হাইওয়ের ধারেই বিশাল এই মন্দির দেখতে পাবেন। তাহলে দেরি না করি ঘুরে আসুন স্বামী নারায়ণ মন্দির।
No comments:
Post a comment