আজ থেকে প্রায় চারশো বছর আগে, এই স্থানের গা ঘেঁষে পূর্ব ও পশ্চিম দিক দিয়ে দামোদর ও রূপনারায়ন নদ প্রবাহিত হত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ও কালের নিয়মে এই নদ দুটি যথাক্রমে আরও পূর্ব ও পশ্চিমে সরে যেতে থাকে। তখন এখানে সৃষ্টি হয় এক বিশাল চরভূমির। গড়ে উঠতে থাকে জনভূমি। কিন্তু তখন এই জল জঙ্গলাকীর্ণ ভূখন্ড ছিল ব্যাঘ্রসঙ্কুল, তাই প্রায় সময়ই সেখানে বাঘ আক্রমণ করত আর শিকার হতে হত সেখানে থাকা মানুষদের।
তাই সেখানকার মানুষ এই বিপদ থেকে বাঁচতে শুরু করেন বনবিবি, দক্ষিণরায় ও বাঘেশ্বরী দেবীর পূজা করতে থাকেন। এই বাঘেশ্বরি দেবী হলেন দেবী চণ্ডীরই এক রূপ। চণ্ডিমঙ্গল কাব্যে এই দেবীকে "বনদেবী অভয়ার" সমগোত্রীয়া বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ব্যাঘ্রবাহিনী দেবী বাঘেশ্বারী অষ্টভুজা ও মঙ্গলচণ্ডী স্বরূপা।
প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে স্থানীয় ইংরেজ আমলের জমিদার গোপাল্ লাল শীল নদীর চর থেকে বাঘেশ্বরী দেবীকে তুলে আনেন এবং কাছাড়িপাড়ায় মন্দির স্থাপন করেন।
আরবি ভাষায় "নান" শব্দের অর্থ "চরভূমি"। আর এই দুই নদীর চরভূমিতে বাঘেশ্বরী দেবীর পূজা হত বলেই এই স্থানের নাম হয় প্রথমে "বাঘনান"। আর এই "বাঘনান" থেকেই পরে "বাগনান" - এ রূপান্তরিত হয়েছে বলেই ঐতিহাসিকগনের অভিমত।
আজও সেই মন্দির ও দেবী আছে কাছারিপাড়ায়। প্রতিবছর রাস পূর্ণিমার সময় এই মন্দিরে ধুমধাম করে পুজো হয় দেবীর।
No comments:
Post a comment