কলকাতার সব থেকে পুরনো স্টেশন হাওড়া। প্রত্যেকদিন প্রায় কয়েক লক্ষ লোক যাতায়াত করেন স্টেশন দিয়ে। কিন্তু কিভাবে শুরু হয়েছিল হাওড়া স্টেশনে পথ চলা। তা আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। আজ সেই অজানাকে জেনে নেবার পালা।
আঠারো শতকের তিনের দশকে যাত্রী পরিবহন এবং মালপত্র দেওয়া নেওয়ার জন্য খ্রিস্টান মিশনারীরা হাওড়া- বর্ধমান -সাহেবগঞ্জ -রাজমহল এ রেলপথ নির্মাণের কথা বলেন।
পরবর্তীকালে 1833 সালে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ও প্রস্তাব দেন রেল চলাচল এর। এরপর G W B R এবং E I R সংস্থা দুটি জোট বেঁধে বর্ধমান অবধি পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের কথা বলে। সেই অনুযায়ী 1854 সালের 17 ই আগস্ট লাইন পাতা হয়। চিফ ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টান বুল হাওড়া বর্ধমান রেল পথ পরীক্ষা করে ট্রেন চলাচলের অনুমতি দেন। কিন্তু স্টেশন? হুগলি নদীর পশ্চিম পাড়ে রোমান ক্যাথলিক অনাথ আশ্রম এবং চার্চের জায়গাটি কোম্পানি কিনে নেয়। সেখানেই প্রথম হাওড়া স্টেশন তৈরি করা হয়। স্টেশন 1860 সাল অবধি চালানো হয়েছিল এরপর 1851 সালে স্টেশনের নতুন প্ল্যান জমা পড়ে। প্রথমে প্ল্যান টি বাতিল হয়ে গেল ও ক্রমবর্ধমান যাত্রীর চাপে পরের বছর কোম্পানি স্টেশন বাড়ানোর অনুমতি দেন।
শুরু হলো স্টেশন নির্মাণ। অস্থায়ী টিকিট ঘর ।1 854 সালের 15 ই আগস্ট সকাল 8 টা 30 মিনিটে প্রথম লোকাল ট্রেন চলে হাওড়া থেকে বর্ধমান অব্দি। যাত্রাপথে ট্রেনটি তিন জায়গায় থেমে ছিল। বালি, শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর। সময় লেগেছিল 51 মিনিট। প্রথম দিন যাত্রার আনন্দ নেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা পড়েছিল তিন হাজারেরও বেশি। এরপর 1865 এবং 95 সালে হাওড়া স্টেশনে পরিবর্ধন ঘটে। রোমান স্থাপত্য শিল্পের অনুকরণে লাল ইটের দেওয়াল এ নির্মাণ করা হয় হাওড়া স্টেশনকে। 1901 সালে নতুন স্টেশন স্থাপন করা হয় ।সেই সময়কার দুটি বড় ঘড়ি আজও হাওড়া স্টেশনে বর্তমান।
প্রথম দিকে হাওড়া ব্রিজ না থাকায় যাত্রীদের আর্মেনিয়ান ঘাটে এসে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে হত। এখন যেখানে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড সেখানে ছিল ঘোড়ার গাড়ি ও রিক্সা স্ট্যান্ড। এই ছিল প্রথম দিকের হাওড়া স্টেশন। আর আজকে তার পরি ব্যাপ্তি আমরা সকলেই জানি।
No comments:
Post a Comment