
তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে আমরা সবাই পাহাড়ে ছুটি কাটাতে যাই। সে দার্জিলিঙে হোক বা নেপাল ভুটান ,কিন্তু আজ আমরা এমন একটি জায়গার সন্ধানে চলেছি যেখানে যেতে গেলে নেপাল ভুটান যাওয়ার মতো অর্থ ব্যয় করতে হয় না। উপরন্তু এখানকার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য মনের মধ্যে এক অপরূপ স্নিগ্ধতা এনে দেয়। এখান থেকেই হিমালয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং দেখার জন্য কোন দূরবীন প্রয়োজন হয় না।
ভারতের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়।এই জেলার তেঁতুলিয়া অঞ্চল থেকে হিমালয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সুন্দর মায়াবী দৃশ্য দেখা যায়।এখানে এলে যে বিশেষ কয়েকটি স্থান এর সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে সেগুলি হল ভারত বাংলাদেশের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মহানন্দার সূর্যাস্ত দর্শন, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, সবুজের সমারোহে ঘেরা নয়নাভিরাম চা বাগান, মুঘল আমলে স্থাপিত মির্জাপুর শাহী মসজিদ, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান বদেশ্বরী মন্দির (সতীর 51 পীঠের একপিঠ), পাথর সমৃদ্ধ রক্স মিউজিয়াম, পিকনিক কর্নার ,ডাকবাংলো, বার আউলিয়ার মাজার, কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট এর আনন্দধারা, শিশু পার্ক আর যে জিনিসটি না দেখলেই নয় সেটি হলো ভূগর্ভস্থ নদী থেকে পাথর উত্তোলন ।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত শরৎ শুভ্র নীল আকাশের বুক চিরে দেখা যায় হিমালয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা কে। গত দুই বছর তেঁতুলিয়া থেকে হিমালয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ নৈসর্গিক শোভা দেখতে ভিড় করেছেন দেশি-বিদেশি বহু পর্যটক। বরফের উপর সূর্যের আলো পড়লে চকচক যে দুত্যি তৈরি হয় তা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খুব স্পষ্টভাবে কাছ থেকে দেখা যায় তেঁতুলিয়া অঞ্চলে। থেকে কেউ বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে ,আবার কেউ একা কেউ বা পরিবারবর্গ সঙ্গে নিয়ে চলে এসেছেন তেঁতুলিয়ায় ছুটি কাটাতে। প্রকৃতির মাঝে নিজেদের কে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার আনন্দে। কেমন দেখায়?
দিনের আলো কমে এলে সীমান্তে কাঁটাতার গ্যাস লাইটের আলো, মহানন্দার কুল কুল শব্দ পর্যটকদের মন ভরিয়ে তোলে। এছাড়া বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেসন চালু হওয়ার পর থেকে তো পর্যটকদের ভিড় আরো বেড়েছে।তবে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ এর একটা ছোট্ট অসুবিধা হলো, এখানে পর্যাপ্ত থাকার ব্যবস্থা নেই। তাই রাত্রি বাসের জন্য যেতে হয় 60 কিলোমিটার দূরে পঞ্চগড় শহরে। তবে যে হারে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে সরকারি এবং বেসরকারি সহযোগিতায় পর্যটকদের রাত্রি বাসের ব্যবস্থা পাকাপাকিভাবে করা যাবে ।আর তখন হিমালয় কন্যা তেঁতুলিয়ার খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে।
No comments:
Post a Comment